About Khulna

খুলনা বিভাগ বাংলাদেশের আটটি বিভাগের মধ্যে একটি এবং এটি দেশের দক্ষিণ পশ্চিম দিকে অবস্থিত।

 বিভাগটির আয়তন ২২,২৮৫ বর্গ কিলোমিটার এবং জনসংখ্যা ১৫,৫৬৩,০০০ জন। খুলনা বিভাগের সদর দপ্তর খুলনা শহর। ঢাকা ও চট্টগ্রাম শহরের পরে বাংলাদেশের তৃতীয় বৃহত্তম  বিভাগ হলো খুলনা বিভাগ


 খুলনা বাংলাদেশের দক্ষিণ পশ্চিমাঞ্চলে রূপসা নদী এবং ভৈরব নদীর তীরে অবস্থিত। বাংলাদেশের প্রাচীনতম নদী বন্দরগুলোর মধ্যে খুলনা অন্যতম। খুলনা, যশোর ও কুষ্টিয়া অঞ্চল বাংলাদেশের অন্যতম শিল্প ও বাণিজ্যিক এলাকা হওয়ায় খুলনা ও যশোর এবং কুষ্টিয়া অঞ্চল নিয়ে গঠিত এই বিভাগ কে শিল্প ইন্ডাস্ট্রির বিভাগ হিসেবে ডাকা হয়।

 খুলনা শহর থেকে ৪৮ কি.মি. দূরে বাংলাদেশের দ্বিতীয় সমুদ্র বন্দর মোংলা বন্দর অবস্থিত। দেশের সবচেয়ে বড় স্থলবন্দর বন্দর খুলনা বিভাগের যশোরে অবস্থিত। বাংলাদেশের প্রথম রেলপথ এবং এশিয়ার সর্ববৃহৎ চিনিকল কেরু এন্ড কোম্পানি খুলনা বিভাগের চুয়াডাঙ্গা জেলাতে অবস্থিত। এছাড়া কুষ্টিয়ায় রয়েছে ভারী শিল্পাঞ্চল। বাংলাদেশের কয়েকটি উঁচু ভবনের মধ্যে কুষ্টিয়ার বিআরবি কেবল টাওয়ার অন্যতম যা ৪০ তালা।

এছাড়া চুয়াডাঙ্গাতে রয়েছে জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের ভিটা, যশোরে রয়েছে মাইকেল মধুসূদন দত্তের ভিটা, কুষ্টিয়ায় রয়েছে কবি রবীন্দ্রনাথের ভিটা, বাগেরহাটে রয়েছে ষাট গম্বুজ মসজিদ সহ খুলনা বিভাগের জেলা গুলো তে রয়েছে অনেক নিদর্শন। পৃথিবী বিখ্যাত উপকূলীয় বন সুন্দরবন খুলনা বিভাগের দক্ষিণাংশে অবস্থিত।

 খুলনা বিভাগের খুলনা, বাগেরহাট ও সাতক্ষীরা জেলায় সুন্দরবনের বিস্তৃতি ঘটেছে। খুলনাকে সুন্দরবনের প্রবেশদ্বার বলা হয়। এছাড়া কুষ্টিয়া তে রয়েছে লালন শাহ এর মাজার, চুয়াডাঙ্গাতে রয়েছে ঘোলদাড়ী শাহী মসজিদ এবং যশোরে রয়েছে বহু ঐতিহাসিক সব নিদর্শন। রাজধানী ঢাকা থেকে খুলনা শহরের দূরত্ব সড়কপথে ৩৩৩কি.মি.। রাজধানী সহ দেশের অন্যান্য অঞ্চলের
সংগে স্থলপথ, আকাশপথ, জলপথ ব্যবহার করা যায়। ১৯১২ সালে থেকে অত্র অঞ্চলে নদীপথে স্টিমার (স্টিমবোট) চলাচল করে।খুলনা বিভাগের জেলা গুলোর মধ্যকার যোগাযোগ ব্যবস্থা দেশের অন্যান্য জেলা গুলোর থেকে অনেক ভালো

খুলনা বিভাগকে সাদা সোনার দেশ ও বলা হয়. খুলনা - সুন্দরবন, সন্দেশ, নারিকেল এবং গলদা চিংড়ির জন্য  ‍খুলনা  বিখ্যাত।

 ইতিহাস

ব্রিটিশ ভারতে খুলনা বিভাগ ছিল প্রেসিডেন্সি বিভাগ এর একটি অংশ। ১৯৪৭ সালের আগে প্রেসিডেন্সি বিভাগের ছয়টি প্রধান জেলা ছিল, মুর্শিদাবাদকলকাতাচব্বিশ পরগনাখুলনা, অবিভক্ত যশোর এবং অবিভক্ত নদিয়া

১৯৪৭ সালে দেশ ভাগের সময় এই বিভাগটিকে দুটি ভাগে বিভক্ত করে। খুলনা জেলা এবং যশোর এবং নদিয়া জেলার সিংহভাগ নব প্রতিষ্ঠিত পূর্ব বাংলার অংশ হয়ে যায়। এবং প্রেসিডেন্সি বিভাগের বাকি জেলাগুলি পশ্চিমবঙ্গ এর অংশ হয়ে যায়।

১৯৪৮ সালে পূর্ববঙ্গের নদিয়া জেলার সিংহভাগ নিয়ে নতুন কুষ্টিয়া জেলা গঠন করে। এবং পূর্ববঙ্গ সরকার যশোরখুলনা ও কুষ্টিয়া জেলাকে রাজশাহী বিভাগে যুক্ত করে৷ ১৯৬০ সালে তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান সরকার সেই সময়ের রাজশাহী বিভাগের কুষ্টিয়াযশোর ও খুলনা এবং ঢাকা বিভাগের বরিশাল,নিয়ে খুলনা বিভাগের যাত্রা শুরু হয়। ১৯৯৩ সালে খুলনা বিভাগ থেকে আলাদা করে বরিশাল বিভাগ গঠিত হয়।

ভৌগোলিক অবস্থান

খুলনা বিভাগ এর পশ্চিমে পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের সীমানা, উত্তরে রাজশাহী বিভাগ, পূর্বে ফরিদপুর বিভাগ ও বরিশাল বিভাগ এবং দক্ষিণে বিখ্যাত ম্যানগ্রোভ নামে পরিচিত সুন্দরবন সহ বঙ্গোপসাগরের উপর তটরেখা রয়েছে। এটি গঙ্গা নদীর দ্বীপ বা গ্রেটার বেঙ্গল ডেল্টার একটি অংশবিশেষ। অন্যান্য নদীর মধ্যে রয়েছে মধুমতি নদীভৈরব নদ ও কপোতাক্ষ নদ। এছাড়াও অঞ্চলের বঙ্গোপসাগরের কয়েকটি দ্বীপ রয়েছে।