ইদানীং কানে খুব বেশি শুনে যাচ্ছি। জানেন? কোনো সমস্যা ছাড়াই এই সমস্যায় পড়ে গেছি। কেও যদি বলে হাস, কানে শুনি আমি বাশ।এমনকি প্রেমিকা আমার,রাতে বলল আই লাভ ইয়ু, আমি শুনলাম " আমরা পালাবো"। তো আমিও উত্তর দিছি "কোন দিন?"। প্রেমিকা ভাবছে আমি তার আই লাভ ইয়ু কথাটাকে ignore করছি। সঙে সঙে তালাক দেয় আমাকে।অর্থাৎ নাম্বার,ইমু,মেসেঞ্জার সব কিছু থেকেই ব্লক। কস্টে বুক ফেটে হাসি বের হচ্ছে। মনে মনে ভাবছি, প্রেমিকা মনে হয় কানে শুনেনা। বললাম একটা,আর কি না কি বুঝলো। শালী বয়রার ঘরের বয়রা। কিন্তু কিছুদিন পর বুঝতে পারলাম,বয়রা আমি নিজেই। ফ্রেন্ডের বোনের বিয়েতে গেছি দাওয়াত খেতে। মূলত অন্য সময় বন্ধু আমার কলিজা খুব কেয়ার করে আমার। কিন্তু আজকে বাটপারের কাহিনী দেখে এক বুক অভিমান হলো। আমি তার বাড়ি আসছি,অথচ আমাকে একটু সময়ও দিচ্ছেনা। একটু পর পর এসে শুধু সিগারেট নিয়ে যাচ্ছে। সে যাইহোক, আমি দাওয়াত খেয়ে বাড়ি চলে যাই,সেটাই মঙ্গল হবে। টেবিলে বসতেই দেখি, আমার চারপাশ জুড়ে ডানাকাটা পরীরা বসেছে। লজ্জায় কুটিকাটি হয়ে যাচ্ছি। হাতটা তুলে প্লেট নিতে পারছিনা। মনে হচ্ছে,হাতটাও খুব লজ্জা পেয়েছে। একটা মেয়ে আমাকে হেল্প করলো। সে হাত এগিয়ে দিয়ে আমাকে বললো," ভাইয়া,এই নিন প্লেট। মেয়েটির মুখে ভাইয়া ডাক শুনে অভিমান হলো। তবে তাতে কি, চাচি দেখি সবসময় তার স্বামীকে ভাইয়া বলে ডাকে। তাতে যদি সমস্যা না হয়,তবে এখানে কি এমন হবে। পাশের মেয়েটি আবার আমাকে বলল," ভাইয়া ভাত নিন?। আহহ আহা আ, মনে হচ্ছে এ তো বিয়ে বাড়িতে আসিনি, এসেছি পাখিদের রাজ্যে।বলুক তারা ভাইয়া,তাতে আমার কি। তখন আরেকটি মেয়ে বলল," ভাইয়া,আপনি কি প্রতিবন্ধী নাকি, সব আমরাই বলে দিচ্ছি"। মেয়েটার কথা শুনে রাগ উঠেছে বুকের উপর। অভিমানের পাল্লায়,রাগের পাল্লা ওজন। চেয়ার থেকে দাঁড়িয়ে বলা শুরু করেছি, তুই প্রতিবন্ধী, তোর ১৪ গোস্টি প্রতিবন্ধী, তুই প্রতিবন্ধীর গোস্টি। আমার এমন হৈ চৈ দেখে আমার বন্ধু দৌড়ে আসে, এসে আমাকে বলল" কিরে, রেগে গেলি কেনো?। আমি উত্তর দেওয়ার আগেই, সে মেয়েটি কান্না করতে করতে বলল," ভাইয়া,আমি উনাকে বলেছি আপনি কি এখানকার প্রতিবেশি? কিছু বলুন? সব তো আমরাই বলে যাচ্ছি। আর এইটা বলায় উনি আমাকে কতোগুলো গালি মেরে দিলো। মেয়েটার কথা শুনে বুঝলাম, এখানে মেয়ে পটানো তো দূরে থাকুক, খাবারটাও খেতে পারবোনা। নিজে নিজে একটা মুড বাড়িয়ে,ভাব দেখিয়ে চলে এলাম। নিশ্চয় অনেকে ভাবছে, কোথা থেকে আসে এসব পাগল ছাগল। সেদিন বেইজ্জতি হয়ে আর বন্ধুর সঙে দেখা করিনি। দোকানে এসে দোকানীকে বললাম," মামা,একটা সিগারেট দিন। দোকানদার বলল," বাইঞ্চদ। মাথা হয়ে গেছে গরম। উনার দোকানের সামনে যা যা মুদি মাল ছিলো,সব উনার গায়ে মেরে দিলাম। দোকানের সামনে থেকে একটা লাঠি নিয়ে দোকান ভাংচুর শুরু করেছি। একটা লোক এসে বলল,"আরে রিয়াজ ভাই কি করছেন। আমার কথা বলার পূর্বেই দোকানী কান্না করে বলল," আরে,আমি কি করছি, উনি বললেন সিগারেট দেওয়ার জন্য,আমি বললাম বাকি? আর ওমনি উনি আমাকে পেটানো শুরু করে দিছে। কয়েকটা থাপ্পড় আর লাথি খেয়ে বাসায় ফিরলাম। সাথে ৩ হাজার জরিমানা দিতে হয়েছে। ফেসবুকে নামকরা একজন লেখক" খালিদ হাসান। তার নাকি বই বের হয়েছে। আমাদের এলাকায় থাকে উনি। বয়সে আমার সিনিয়র, তাই সম্মান করি খুব। তো সেদিন হুট করে দেখা হয়ে যায়। দেখলাম, কাধে একটা লম্বা ব্যাগ,হাতে সাধারণ একটা ঘড়ি,গায়ে সাদা পাঞ্জাবি আর চোখে ইয়া বড় একটা সাদা চশমা। ভিতর থেকে হাসি বের হলেও,না হেসে বললাম। কি খালিদ ভাই,আপনি নাকি বই বের করতে যাচ্ছেন? আমার কথায় উনি মৃদু হেসে উত্তর দিলেন, আমি করিয়াছি বিশ্ব জয় মোর সাহিত্য গড়িয়াছে, অশালীনতার সংশয়। কেহো মোরে কহিবে না, নিম্মৃ কেশ ফেলিয়াছিস, জয়ী করিয়াছি আমি, সাহিত্য বাপুরে বলিয়া দিস। খালিদ ভাইয়ের কথা শুনে আগা মাথা কিছুই বুঝলাম না। ঘ্যানঘ্যান করে কি বলল,তিনি আর উনার সাহিত্য জানে। আমি না বুঝেও প্রশ্ন করলাম," তা প্রকাশিত বই আছে? থাকলে একটা দিন। উনি ব্যাগ থেকে একটা বই বের করে বলল," সাবধানে পুটকিতে দিস। মটকা গরম হাত নরম। তবুও কে কাকে আটকায়। উনি লেখক বলে কি, যা ইচ্ছা তা বলে যাবে? আমি বলতে শুরু করছি," আপনার পুটকিতে আপনার বই দেন মিয়া। চুলের বই পড়িনা আমি। রাগে হন হন করে চলে আসছি। বাসায় এসে দেখি খালিদ ভাই পোষ্ট দিছে, - আজ মোর অঙ্গে ভারি কষ্ট, রিয়াজকে বলিয়াছি কি, সে করিলো সবি নষ্ট। সাবধানে পড়িস বলাতে, উত্তরে ভাষা করিয়াছে ভ্রষ্ট। মনে মনে ভাবলাম, পুটকি বলা ঠিক হয়নি। খালিদ ভাইকে কল দিয়ে সরি বলা দরকার। ফোন দিতেই খালিদ ভাই বলল " খানকি বলছিস? এবার আরো বেশি মটকা গরম হয়েছে, দিছি আমিও কয়েকটা ছড়া কবিতা শুনিয়ে। পরে জানলাম সে বলেছিলো," খালিদ বলছি। তারপর থেকে খালিদ ভাইয়ের সামনাসামনি যাইনি। সেদিন আব্বু বলেছে, রিয়াজ তাড়াতাড়ি মারা যা। আব্বু আমাকে মরতে বলছে? কি নিষ্পাপ পাষাণ বাপ আমার। রোজগার করিনা বলে মরে যেতে বলবে। প্রচণ্ড অভিমান করে চারদিন ভাত খাইনি। ৫ দিনের মাথায় আব্বু এসে বলল" কিরে, যেদিন বলেছি তাড়াতাড়ি মামির বাসায় যা। সেদিন থেকে খাবার ছেড়ে দিয়েছিস কেনো? মামির সাথে ঝগড়া হয়েছে?
আব্বার কথা শুনে কস্টে শিধা হয়ে গেছি। তারমানে হুদাই এই কয়দিন না খেয়ে ছিলাম? নিজেকে নিজে গালি দিতে মন চাচ্ছে, শালা বয়রার ঘরের বয়রা। ????