assassination !!! এস্যাশিনেশন !!! গুপ্তহত্যা !!!
হঠাৎ আতর্কিত হামলা !!! ঢা ঢা ঢা কিংবা শাণিত তলোয়ারের বিদ্যুত ঝলকানি অথবা কখনো তরল মৃত্যু, হতে পারে তা তীব্র কোন বিষ কিংবা বিষধর কোন সাপের কামড়, কিংবা হাজার মিটার দুর থেকে বা পয়েন্ট ব্লাংক রেন্জে ছোড়া কোনো প্রানঘাতী গুলি। তবে সুখে বিষয় হলো আমার-আপনের "এস্যাসিনেশন" হবে না, আমি-আপনে হতে পারি খুন। "এস্যাসিনেশন" হতে হলে আপনাকে হতে হবে কোনো সেলিব্রেটি। "এস্যাসিনেশন" এর পিছনে অবশ্যই একটা মোটিভ থাকতে হবে যেমন- যদি আপনি হয়ে থাকেন রাজনীতিবিদ, ধর্মীয় ব্যক্তিত্ব বা রাজপরিবারের কেও, কারন হতে পারে ঈর্ষা, রাজনৈতিক বা ধর্মীয় আদর্শবাদ, ভাড়াটে খুনি, প্রতিশোধ ইত্যাদি। আসুন আজ পড়ি বিশ্বের ইতিহাসের সবচেয়ে বিখ্যাত সফল ১০টি assassinations এর কথা।
১০) Alexander Litvinenko
ধরনা করা হয় আলেকজান্ডার একজন ডাবল এজেন্ট ছিলেন, একজন রাশিয়ান KGB এর এজেন্ট যিনি পরবর্তীতে MI6 এজেন্ট হিসাবে কাজ করেতেন। ১লা নভেম্বর ২০০৬, সকালে তিনি লন্ডনের "Itsu" নামের একটি সুশি রেস্টুরেন্টে খাবার খাওয়ার পর অসুস্থ হয়ে পড়ে, সে সময় তার সাথে ছিলো একজন ইতালিয়ান "nuclear waste" এক্সপার্ট। তিনি রেস্টুরেন্টে খাওয়ার সময় তিনি অন্য একটি হত্যাকাণ্ডের এভিডেন্স গ্রহণ করছিলেন। কিন্তু অসুস্থ অবস্থায় তিনি তার মৃত্যুর জন্য দুই প্রত্যন KGB এজেন্টকে(Dmitry Kovtun ও Andrei Lugovoi) দায়ী করেন যাদের সাথে তিনি দুইদিন আগে দেখা করেছিলেন। ধারনা করা হয় Kovtun তার বাসায় ও গাড়িতে polonium-210 রেখে আসেন। ৩রা নভেম্বর আলেকজান্ডারের অবস্থা খারাপ হয় এবং তাকে লন্ডনের Barnet জেনারেল হাসপাতালে দ্রুত ভর্তি করা হয়। সেখানে তিনি তিন সপ্তাহ হাসপাতালে তেজস্ক্রিয় ইউনিটে চিকিৎসাধিন থাকার পর মারা যান। ঘটনার সাথে হলিউডের বিভিন্ন সিনেমার মিল আছে। এ কারণে সম্ভবত, বিশ্বব্যাপী এটি মিডিয়া কভারেজ অর্জন করে। আলেকজান্ডার ৪৪ বছর বয়সী মারা যান। অসুস্থ্য হবার একদিন আগে তিনি ইসলাম ধর্ম গ্রহন করেন।
{বেশ কয়েকটি কন্ট্রোভার্সাল ঘটনার তদন্ত কর্মকর্তা ছিলেন তিনি। ২০০৫ সালে মহানবী (সাঃ) এর ব্যাঙ্গ করে আঁকা ছবি যা একটি ডেনমার্কের পত্রিকায় ছাপা হয়েছিন, তার তদন্ত কর্মকর্তা ছিলেন তিনি।}
৯) Lee Harvey Oswald
লি ছিলো সাবেক ইউ এস মেরিন ও স্নাইপার। সে ছিলো President John F. Kennedy এর হত্যাকারী। President John F. Kennedy কে হত্যা করার দুই দিন পর তাকে হত্যা করা হয়। যখন তাকে ডালাস পুলিশ হেডকোয়ার্টার থেকে ট্রান্সফার করা হচ্ছিলো তখন ডালাস নাইটক্লাবের মালিক Jack Ruby সমস্ত টিভি চ্যানেল ও মিডিয়ার সামনে গুলি করে হত্যা করেন।
৮) John Lennon
মার্ক ডেভিড চ্যাপম্যান ছিলো বীট্ল্স শিল্পী জন লেননের আততায়ী। ১৯৮০ সালের ডিসেম্বর ৮ তারিখে চ্যাপম্যান নিউ ইয়র্ক শহরে লেননকে গুলি করে হত্যা করেন। লেনন ও তাঁর স্ত্রী ইয়োকো ওনো যখন তাঁদের অ্যাপার্টমেন্ট ভবনের বাইরে দাঁড়িয়ে ছিলেন, তখন চ্যাপম্যান লেননের পিঠে ৪বার গুলি করেন। গুলি করার পরে পুলিশ আসা পর্যন্ত চ্যাপম্যান ঘটনাস্থলে অপেক্ষা করেন। পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হবার পর চ্যাপম্যান দোষ স্বীকার করেন। তাঁকে ২০ বছর যাবতজীবন কারাদণ্ডের সাজা দেয়া হয়। ২০১০ সাল পর্যন্ত ৫ বার তাঁর প্যারোলে মুক্তির আবেদন খারিজ করা হয়েছে, ফলে তিনি এখনো নিয় ইয়র্কের অ্যাটিকা কারাগারে সাজাভোগ করছেন। লেননের স্ত্রী ইয়োকো ওনো প্যারোলে চ্যাপম্যানের মুক্তির আবেদনের বিরোধিতা করেছেন। কারন এখনো পরিস্কার হয়নি।
৭) Robert F. Kennedy
মার্কিন সিনেটর রবার্ট এফ কেনেডি জন এফ কেনেডির ছোট ভাই। তিনি Sirhan Sirhan নামক ব্যক্তি দ্বারা ৫ই জুন ১৯৬৮ গুপ্তহত্যার শিকার হন, একদিন পরে, কেনেডি হাসপাতালে মারা যায়। তাকে পয়েন্ট ব্লাংক রেন্জে চার বার গুলি করা হয়েছিলো। তিনি তখন গণতান্ত্রিক পার্টির প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী ছিলেন। হত্যাকাণ্ডের মোটিভ এখনো অজানা, তবে ধারনা করা হয়, ১৯৬৭ সালের ছয় দিনের যুদ্ধে ইস্রায়েলকে মার্কিন সমর্থনের জন্য ফিলিস্তিনের প্রতিশোধ। কেনেডি ৪২ বছর বয়সী মারা যান।
৬) Malcolm X
ম্যালকম এক্স (১৯শে মে, ১৯২৫ – ২১শে ফেব্রুয়ারি, ১৯৬৫) ছিলেন একজন আফ্রিকান-মার্কিন মুসলিম রাজনীতিবিদ ও ধর্মীয় নেতা, যিনি যুক্তরাষ্ট্রে কৃষ্ণাঙ্গদের মানবাধিকার আদায়ের আন্দোলনে অন্যতম অংশগ্রহণকারী ছিলেন। জন্মের পর তাঁর নাম হয় ম্যালকম লিট্ল এবং ইসলামে ধর্মান্তরিত হলে তাঁর নতুন নামকরন হয় ম্যালকম এক্স। তিনি আল-হাজ্জ মালিক আল-শাব্বাজ নামেও পরিচিত।
ম্যালকম লিট্ল ১৯২৫ সালের ১৯শে মে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নেব্রাস্কা রাষ্ট্রের ওমাহা শহরে একটি খ্রিষ্টান আফ্রিকান-মার্কিন পরিবারে জন্ম গ্রহণ করেন। আর্ল লিট্ল এবং তার দ্বিতীয় স্ত্রী লুইস লিট্লের সাঁত সন্তানদের মধ্যে ম্যালকম লিট্ল ছিলেন চতুর্থ। তাঁর বাল্যকালে পিতার কাছ থেকে কৃষ্ণাঙ্গদের গৌরব ও নিজের আত্মবিশ্বাস গোড়ার সম্পর্কে জ্ঞানধারন এবং জাতি নিয়ে তাঁর নিজের অভিজ্ঞতা, তাঁর প্রাপ্তবয়সে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। তাঁর বয়স তেরো হলে তাঁর পিতা মৃত্যুবরণ করে এবং তাঁর মাতা মানসিকভাবে অসুস্থ হয়ে যাওয়ার ফলে তাঁর মাতাকে আ্যসাইলামে ভর্তি হতে হয়।
অনেক পালক পরিবারদের মাঝে ধারাবাহিকভাবে থাকার পর, বস্টন এবং নিউ ইয়র্ক শহরে ম্যালকম লিট্ল বেশ্যামী, ছিনতাই এবং অন্যান্য অপরাধমূলক কাজে নিযুক্ত থাকেন। ১৯৪৬ সালে পুলিশ তাঁকে গ্রেপ্তার করে এবং আদালত তাঁকে সাজা দেওয়ার জন্য আট থেকে দশ বছরের জন্য কারাদন্ডের আদেশ দেয়।
বন্দিকালে ম্যালকম লিট্ল শিয়া ইসলামে ধর্মান্তরিত হন এবং একটি ইসলামী দল, নেশন অব ইসলামের সদস্য হন। ১৯৫২ সালে তাঁর বন্দির শর্তাধীন মুক্তি হলে তিনি তাঁর বংশনাম সরিয়ে এক্স রাখেন এবং ম্যালকম এক্স হিসাবে পরিচয় লাভ করেন। ম্যালকম এক্স পরে নেশন অব ইসলামের অন্যতম নেতা ও প্রধান মুখপাত্র নিযুক্ত হন। অন্তত বারো বছরের জন্য ম্যালকম এক্স নেশন অব ইসলামের সদস্য হিসাবে প্রচারমাধ্যমে জনতার মধ্যে পরিচিত ছিলেন। ১৯৫৮ সালে বেটি স্যান্ডার্সের সঙ্গে ম্যালকম এক্স বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন। নেশন অব ইসলামের প্রধান, এলাইজাহ মুহাম্মাদের সাথে ম্যালকম এক্স-এর বিবাদ সৃষ্টি হলে ম্যালকম এক্স নেশন অব ইসলাম প্রস্থান করেন।
মার্টিন লুথার কিং এর সাথে ম্যালকন এক্স
এখনে উল্লেখ্য যে তিনিই মোহাম্মদ আলিকে ইসলাম ধর্ম গ্রহনে উদ্ভুদ্দ করেন। তারা দুজনই প্রথমে "নেশন অফ ইসলাম" এর সদস্য ছিলেন পরে তারা দুজনই সুন্নি ইসলাম গ্রহন করেন।
নেশন অব ইসলাম প্রস্থান করার পর, ম্যালকম এক্স সুন্নী ইসলামে ধর্মান্তরিত হন এবং মক্কায় হজ করেন, যার পর থেকে তিনি জাতিভেদ অস্বীকার করেন। ম্যালকম এক্স আফ্রিকা এবং মধ্যপ্রাচ্যে ব্যাপকভাবে ভ্রমণ করে ছিলেন।
তিনি একটি ইসলামী দল, মুসলিম মস্ক এবং সকল আফ্রিকান-মার্কিনদের জন্য একটি ধর্মনিরপেক্ষ দল, অরগানাইজেশন অব আফ্রো-আমেরিকান ইউনিটি প্রতিষ্ঠান করেন। নেশন অব ইসলাম প্রস্থান করার এক বছরের থেকেও কম সময়ের মধ্যে, ১৯৬৫ সালের ২১শে ফেব্রুয়ারি, নিউ ইয়র্কে ম্যালকম এক্স জনতার সামনে একটি বক্তৃতাদানের সময়, কিছু ঘাতক তাঁকে গুলি করে হত্যা করে।
৩জন "নেশন অব ইসলাম" সদস্য তাকে পয়েন্ট ব্লাংক রেন্জে ১৬ রাউন্ড গুলি করে।
৫) Martin Luther King Jr
মার্টিন লুথার কিং আমেরিকান নাগরিক অধিকার আন্দোলনের পিছনে মূল মানুষ ছিলেন। আন্দোলনটি ছিলো আফ্রিকান আমেরিকানদের প্রতি জাতিগত বৈষম্যের প্রতিবাদে।
১৯৬৮ সালের ৪ই এপ্রিল তিনি মোটেলের দ্বিতীয় তলায় রুম ব্যালকনিতে যখন দাঁড়িয়ে ছিলেন তখন গুলিবিদ্ধ হন। হত্যার পর এর প্রতিবাদে মার্কিন জুড়ে ৬০ টিরও বেশি শহরে দাঙ্গা শুরু হয় এবং পাঁচ দিন পরে প্রেসিডেন্ট জনসন শোকদিবস ঘোষণা করেন।
দুই মাস পরে, আসামি জেমস আর্ল রে লন্ডনে গ্রেফতার হয়। আফ্রিকান আমেরিকান নাগরিক অধিকার আন্দোলনের বিরোধী ছিলো। কিং শান্তিতে নোবেল প্রাইজ জিতেছিলেন।
৪) Abraham Lincoln
আব্রাহাম লিঙ্কন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ১৬তম রাষ্ট্রপতি। John Wilkes Booth ছিলো তার হত্যাকারী। জন ছিলো কনফেডারেল স্পাই যে আব্রাহাম লিংকনের আফ্রিকান আমেরিকানদের স্বাধীনতা দেওয়ায় রেগে গিয়েছিলো। সেদিন লিংকন থিয়েটারে গিয়েছিলো, জন থিয়েটার পূর্ন হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করেছিলো তারপর পয়েন্ট ব্লাংক রেন্জে মাথায় গুলি করে।
জন গুলি করে পালিয়ে যায় কিন্তু ১২ দিন পরে ধরা পরে এবং তাকে তৎক্ষনাত গুলি করে হত্যা করা হয়।
John Wilkes Booth
৩) Julius Caesar
জুলিয়াস সিজার তিনি একটি সফল সামরিক নেতা ছিলেন। ০০০১ বিসি একটি রোমান রাজনৈতিক ও সামরিক ব্যক্তিত্ব সংঘাতের পর রোমান প্রজাতন্ত্রে তার একনায়কতন্ত্র প্রচার করেছিলেন। যাইহোক, রোম কিছু সেনেটর সিজারের এই হস্তক্ষেপ মেনে নেয়নি।
তাই তারা সিজারকে হত্যার পরিকল্পনা করে। একদিন থিয়েটার থেকে ফেরার পথে সিজারকে একদল সেনেট ঘিরে ধরে, তাকে তারা একটি জাল বিল পড়তে বলে। বিলটি ছিলো সিনেটরদের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করা সংক্রান্ত। সিজার যখন তা স্বাক্ষর করেন তখন তাকে ছুরিকাঘাত করা হয়।
ঐতিহাসিক প্রমাণ অনুযায়ী, সেদিন ৬০ জন সেনেটর উপস্থিত ছিল। তাকে সর্বমোট ২৩ বার ছুরিকাঘাত করা হয়। তাঁর সবচেয়ে কাছের বন্ধু Brutus ও তার সাথে বেইমানী করে। মরার আগে শেষ শব্দটি সিজার বলেছিলো তার বন্ধু Brutusকে, "καὶ σύ, τέκνον" (গ্রিক), "Et tu, Brute?"(ল্যাটিন) "And you, Brutus?"।
২) Franz Ferdinand
অস্ট্রিয়ার সিংহাসনের উত্তারাধিকার ছিলেন ফ্রেন্জ ফের্ডিনান্ড।
সার্বিয়ান একটি স্বাধীনতাকামী গ্রুপ The Black Hand তাকে হত্যা করে যার পরিপ্রেক্ষিতে প্রথম বিশ্বযুদ্ধ শুরু হয়। ২৮শে জুন ১৯১৪ সালে তিনি ও তার স্ত্রী সারাজিভো শহর ভিজিট করতে যান।
একটি হুট খোলা গাড়িতে বসে থাকা অবস্থায় তাদের হত্যা করা হয়।
১) John F. Kennedy
কেনিডি ছিলেন আমেরিকার ৩৫ তম প্রেসিডেন্ট। তার হত্যাকান্ড নিয়ে অনেক কন্সপারেসি আছে। সন্দেহ নাই খারাপ কাছে রেকর্ড টাইম(সৃষ্টির শুরু থেকে এখন পর্যন্ত) সময় চ্যাম্পিয়ান আমেরিকার সব কিছুতেই কন্সপারেসি থাকবেই। তার হত্যার জন্য দায়ী করা হয় কাদের জানেন, FBI, the CIA, the USSR ও কিউবা।
তদন্ত অনুযায়ী এই লিস্টের দশ নাম্বার ব্যক্তিকে কেনিডির হত্যাকারী হিসাবে দায়ী করা হয় যদিও মরার আগে পর্যন্ত সে নিজেকে নিরপরাধ দাবী করে এসেছে।