ছোটবেলায় যখন হুজুরের কাছে আরবি শিখতাম , তখন হুজুরের কাছে অনেক ভৌতিক গল্প শুনতাম। জ্বিন,পরীর গল্প । খুব ভালো লাগতো খুব । কৌতুহলী হয়ে পড়লাম । ভাবতাম ইস্ আমাকে যদি জ্বিন ধরতো! তখনো থেকেই খুব শখ হলো । বাসার সবাইকে বলে বেড়াতাম এই শখের কথা । আম্মু তো বকা দিতো । বলতো , "তওবা কর তওবা কর , এগুলা বলতে নেই " । আমি তাও এই আশা করতাম যে আমাকে যদি জ্বিন ধরতো ! জ্বিনটাকে দিয়ে অঙ্ক পড়া করায় নিতাম । বার্গার সন্দেশ যা যা ফাস্টফুড আছে সব আনায় নিতাম এক সেকেন্ডেই । তো হঠাৎ একদিন রাতে এই মনে করেন সাড়ে তিনটার দিকে খুব জোড়ে চেয়ার টানার শব্দে ঘুম ভেঙ্গে গেলে চোখ খুলে দেখি আমার পড়ার টেবিলের চেয়ারে একটা কালো ছায়ামূর্তি বসে একদম বিছানায় আমার দিকে তাকায় আছে । আমি কিছু একটা বলার মুহূর্তেই ছায়ামূর্তি টা চেয়ার তুলে আমাকে মারতে ধরলো । আমি গলা ফেটে চিৎকার দিয়ে উঠলাম । আব্বু আম্মু দৌড়ে আমার রুমে এলো । সব বললাম।
আমি খুব চঞ্চল প্রকৃতির ছেলে । ছোট থেকেই খুব ইন্টারেস্ট জ্বিন-পরী নিয়ে। সবার কাছে শুনতাম জ্বিন পরীর গল্প । গায়ে কাঁটা দিয়ে উঠত গল্প গুলা শুনে । রোমাঞ্চিত হতাম । ভালোই লাগতো । কি অদ্ভুদ গল্প গুলা! কিসের নাকি এটা ওটা এনে দেয়,মিষ্টি খাওয়ায়,পরীর দেশে নিয়ে যায়। শুনে এত কৌতুহল হতাম যে কৌতুলের ঠ্যালায় আমার ছোটতে খুব শখ হতো ইশ্ আমাকে যদি জ্বিন-পরী ধরতো! ভাবতাম জ্বিন ধরলে দোস্ত বানাবো । এটা ওটা এনে নিবো ওর দাঁড়ায় । আর পরী ধরলে পরীর দেশে গিয়ে ঘুরে আসবো। বাড়িতে সবাইকে একথা বলে বেড়াতাম । কিছুদিন পর একদিন রাতে হঠাৎ চেয়ার দ্বারা মেঝে ঘষা শব্দে ঘুম ভাঙ্গলে চোখ মেলেই দেখি এক ভয়ংকর চেহার বিশাল আকৃতির কোনো জীব আমাকে চেয়ার দিয়ে মুখে মারতে ধরতেছে, তখন ই আমি বিকট শব্দে চিল্লান দেই একটা । পরে চোখ খুলে দেখি কেউ নেই । পরে আম্মু আসলো রুমে । পরে সব বলার পর এক হুজুর কে বললাম সব। তখন তিনি বললেন আমি নাকি একদিন এক জ্বিন এর গায়ে থু দিছিলাম রাস্তায়। এটা ঐ জ্বিন সহ্য করে পারে নাই। তাই আমাকে মারতে চেয়েছিল। তারপর ঐ হুজুর ঐ জ্বিন কে তাড়ায় দিছিলো। এরপর আমি আর কোনোদিন জ্বিন-পরীর পাল্লায় পড়ার শখ করি নাই ।