গ্রাম আমদির পাড়া। চারদিক সবুজে ঘেরা, আমাদের পাড়া। মাঠে মাঠে রাখালের বাঁশি বাজানো সুর, চলে যায় গ্রাম পেড়িয়ে বহুদুর। গাছে, গাছে, হরেক রকম ফুল, ফল,পাখির ডাক। রাতে জোনাকী পোকার মিটমিট আলো,আহা খুব সুন্দর লাগে দেখতে ভালো। এই গ্রামকে কেন্দ্র করে আছে একটা বটগাছ। বটগাছটার বয়স প্রায় একশত বছর হবে। এই বটগাছটার চারদিক দিয়ে গড়ে উঠেছে জনপদ। বটগাছের দক্ষিনে যমুনা নদী এবং পশ্চিমে বাঙ্গালী নদী। বটগাছের আশে পাশে বেশ কয়টা দোকান আছে। দক্ষিনে জুমারবাড়ী বাজার,উত্তরে সাঘাটা থানা, কয়েক কিলো দুরে গাইবান্ধা জেলা।
বটগাছের নিচে বসে অনেক শ্রমজীবি লোকজন বিশ্রাম নেয়। বটগাছটা থাকার কারনে ভ্যান চালক ভাইয়েরা ও গ্রামের লোকেরা এর নাম দিয়েছে বটতলী। বটতলী নামেই এই জায়গাটা বর্তমান পরিচিত। এই বটগাছের ইতিহাস বলা বাহুল্য। এই বটগাছ থেকে প্রায় ৫০গজ উত্তরে বুড়ির বাড়ী। আমি সেই ছোট্ট থেকে শুনে আসছি, বুড়ির বাড়ীর কথা, দেখেছি। তবে বুড়ি টাকে আমরা কোনো দিন দেখিনী। আমরা বন্ধু কয়জন। একদিন আমি আমার বন্ধু কয়জন খেলতে গেলাম মাঠে। যেতে হয় ঐ মাঠে বুড়ির বাড়ির পাশ দিয়ে। আমরা মাঠে প্রায় দেড় ঘন্টার মতো খেললাম। আসার পথে আমি কদ্দুছকে বললাম আচ্ছা দোস্ত তুই কি জানিস এই বুড়ি কী ভাবে এতো পরিচয় লাভ করলো? কদ্দুছ আমাকে বললো না আমি তো জানিনা, অবশ্য কোন দিন জানার ও চেষ্টা করিনি। কিন্তু জানা উচিৎ ছিলো আমার। আমার আরেক বন্ধু বললো, আমিও জানিনা। তবে একটু শুনেছিলাম এখানে কোনো এক জায়গায় একটা বুড়ি ছিলো। তার নাকি তিনটি মেয়ে ছিলো, তবে আমাদের মতো মানুষ না, তারা ছিলো পরী।
আমি চমকে উঠলাম। পরীর কথা শুনে, সবাই হা হা করে হেসে উঠলো, আমি লজ্জাই পেলাম। কারন আমি তাদের মধ্যে একাই ভয় পেয়েছি। আমরা প্রায় বুড়ির বাড়ির কাছে এসেছি। তখন সন্ধ্যা সন্ধ্যা ভাব। আমার বন্ধু আসরাফ বললো চলোনা, আমরা ভিতর থেকে সবাই ঘুরে আসি ঘরের মধ্যে তো ঢুকাই যাবেনা। বাহির থেকেই একটু ঘুরে আসি। সবাই রাজি কিন্তু আমি রাজি নই যদি পরী আমাকে ধরে। মনে মনে ভাবছি। কিন্তু আমার একটা কথা মনে পরে যায় তখন, আমার মার, কথা। মা,আমাকে বলেছিলো বাবা যদি কোনদিন কোন বিপদে বা ভয় করো তাহলে একটা দোয়া বলে বুকে তিন বার, ফু দিবে তাহলে বিপদ ভয় কেটে যাবে। আমি তাই করলাম কিন্তু তবুও আমি সবার পিছনে। আমরা গেলাম সেখানে। ইহা বড় একটা তালা লাগানো ঘরটাতে। সবাই অবাক হলাম আমরা তালা দেখে কারন, একশত গজ আশে পাশে কোন ঘর বাড়ী নাই। কেউ থাকেনা তবে এখানে তালা লাগালো কে বা কেনই লাগালো। আমরা একে অপরকে প্রশ্ন করছি।
কিন্তু কেউ বলতে পারছে না। কেউ তালার কথা শুনিনী কারো কাছে। তালাটা চিকচিক করছে অথচ ঘরের বেড়া খসে খসে পড়ছে। ঘরটা খরের। সন্ধ্যার আযান দিবে তখন মাইকে মোয়াজ্জেম ফু দিচ্ছেন। তখন ঘর থেকে বেড় হয়ে গেলো তিনটি শেয়ালের মতো বিড়াল। আমরা সবাই চমকে উঠলাম দেখে কারন ভাঙ্গা ঘরে বিড়াল এলো কোথায় থেকে? তিনটি বিড়াল তিন রকমের সাদা, হলুদ, লাল। আযান দিচ্ছে আমরা তাড়াহুড়া করে বাদে উঠলাম। বাদ দিয়ে হাজারও গাড়ীর চলাচল সব সময়। আর ৫০ গজ দুরে বটতলী। কদ্দুছ বললো, আচ্ছা তোরা কী জানিস বিড়াল তিনটা ঘর থেকে বেড় হলো কেন? আসলে বিড়াল তিনটা কী?
আমি বললাম, বিড়াল তো বিড়ালই তবে আমি তো আগে দেখিনী ঘরের ভিতর বিড়াল ছিলো। এটা তো জানিনা বিড়াল কেন তখন ঘর থেকে বেড় হয়ে গেলো। কদ্দুছ অন্যদের বললো তোরা কী জানিস? সবাই বললো না জানিনা। কদ্দুছ বললো, আমিও সঠিক জানিনা। তবে আমার দাদি একদিন আমাকে বলেছে সন্ধ্যার সময় যখন মোয়াজ্জেম আযান দেয়, তখন নাকী তার আশে পাশে, কোন গায়েবী জিনিস ভূত জ্বিন পরী থাকেনা। যত দুর পযন্ত আযানের কন্ঠ যায়। আর ওগুলো কোন বিড়াল নয়, হতে পারে কোন গায়েবী জিনিস। আমার বন্ধু আসাদ বললো হতে পারে বুড়ির সাথে সেই তিন পরী।
আমি সহ সবাই বললাম হ্যা,হতে পারে। এসে গেলাম বটতলী। সেখানে ছিলো আলম ভাইয়ের দোকান। তার বাড়ী আমাদের বাড়ীর পিছনে। আমরা সবাই তাকে ভাই বলেই ডাকি। তার ছোট ভাই আমাদের সাথে পড়ে। অন্ধকার হয়ে আসচ্ছে মুখটা চেনা যায় আবার যায় না। আমাদের মধ্যে একজন বললো আজ কোন পড়াশুনা নাই। আজ শুধু জানবো বুড়ির কাহিনী আমরা। আলম ভাইয়ের কাছে এলাম আমরা সবাই। একজন বললো আলম ভাই আপনী কী করছেন? তিনি বললো ঘাস কাটছি। আমরা তার সাথে অনেক মজা করি, তিনিও মজাদার মানুষ।
আমরা তাকে সম্মান করি, তিনিও আমাদের ভালোবাসেন। আলম ভাইয়ের কথা শুনে আমরা সবাই হেসে উঠলাম। যে বলেছে ও একটু লজ্জাই পেলো। তবুও প্রশ্ন করা ছাড়লো না। বললো ভাই আপনী কী জানেন ঐ বুড়ির সমন্ধে তার ঘরে সুন্দর তালা, আবার তার নাকী তার তিনটি মেয়ে ছিলো, আমাদের মতো মানুষ না পরী? আলম ভাই বললো হ্যা, তবে আমিও শুনেছি, বুড়িকে দেখিনী, যে টুকু শুনেছি তা বলার এখন তো আর সময় নয়। তবে আমার কথা বললো, আলম ভাই ওর বাবা বলতে পারবে বুড়ির সমন্ধে। নিজের চোখে তারা দেখেছে।
ও জানতে পারবে ওর বাবার কাছ থেকে। আমি জানি তবে ভাই তোরাই তো দেখতে পাচ্ছিস এখন পুরো দোকান করার সময়। আমি তখন বললাম ঠিক আছে তাহলে আমি আমার বাবার কাছ থেকে আজ রাতে জেনে নিবো বুড়ির সমন্ধে। এখন যার বাড়ী তাই যাই। সবাই চলে গেলো। জৈাষ্ঠ মাস খুব গরম। ঘরে থাকাই যেন যায় না। তখন আমাদের বাড়িতে কারেন্ট ছিলোনা। গরমে ঘরে যেন পড়াই যায় না। তাই মা আঙ্গিনায় বিছানায় পাড়িয়ে দিতেন মশারী টাঙ্গিয়ে দিতেন হাড়িকেন জ্বালিয়ে দিতেন আমি পড়তাম। বাতাস বইছে উত্তরের হু হু করে। কিন্তু বাহিড়েই ঘরে ঢুকতোনা বাতাস। আমাদের আঙ্গিনায় বাতাস বেশি বইতো বা লাগতো, তাই ময়মুরুব্বিরা প্রায় সবাই আসতো আমাদের আঙ্গিনায়। বসে আগের গল্প করতো। প্রতিদিনই গল্প হইতো মাঝে মাঝে জারি গানও গায় নিজেরা নিজেরা।
আমি পড়ছি বাবা বাজার থেকে কিলান্ত হয়ে এলেন তা বুঝা যাচ্ছে বাবার গা দেখেই। গা টা ঘেমে গেছে ঝপঝপ করে পানি পড়ছে। বাবার গরম খুব বেশি ঘরে থাকতেই পারেনা বাবা। আমি পড়ছি সেখানেই এসে শুইলেন বাবা। আমাকে বললো মনে যোগ দিয়ে পড়ো। আমার মনের মধ্যে শুধু বার বার নাড়া দিচ্ছে কখন আমি প্রশ্ন করবো বাবাকে বুড়ির সমন্ধে। বাবা আমার ছটপট দেখে বললো বাবা তুমি কী আমাকে কিছু বলবে? আমি বললাম হ্যা বাবা। ঐ বুড়ির কথা বটগাছের কাছে যে বুড়িটা থাকতো। আমার প্রশ্ন বুড়িটা কোথা থেকে এলো, তার নাকী তিনটি মেয়ে ছিলো আমাদের মত মানুষ না পরী। বাবা বললো হ্যা ছিলো। আমি বললাম বাবা প্লিজ বললো না। বাবা বললো যদি বুড়ির কথা বলতে যাই তাহলে তো ভোর হয়ে যাবে।
তার কথা জানার কী খুব দরকার তোমার ? আমি বললাম হ্যা বাবা জানো না আজ তিন ঘন্টা ধরে এই নিয়ে গবেষনা করেছি কিন্তু সফল হইনী। বাবা বললো আমি ঠিক মতো হয় তো বলতেই পারবোনা। পাশের ঘরে থাকতো বাবার চাচা অথাৎ আমার দাদা। তিনি ঘর থেকে বেড়িয়ে আসলো এবং বললো তোর বাবা তো তখন ছোট দেখেছে তবে মনে আছে কী না। বাবাকে দাদা বললো কী তোর কিছু মনে আছে? বাবা বললো বেশি নেই তবে অল্প অল্প। আমি দাদাকে বললাম দাদা গো বলেননা বুড়ির গল্প। দাদা বললো শরীরটা ভালো না সংক্ষিপ্ত করে বলি শোন। ঐ বুড়ির নাম খাদিজা। যমুনা নদীর তীরে থাকতো। ১৯৮৮ সালের বন্যায় আসে আমাদের গ্রামে।
নদীতে ভেসে গেছে তাদের ঘর বাড়ী। তোর দাদার কাছে আসে আশ্রয়ের জন্য। তোর দাদার তখন অনেক জমি জমা ছিলো। তেমনই মনও ছিলো। যেখানে বর্তমানে বুড়ির বাড়ীটা আছে সেই জমিটা তোর দাদার বুড়িকে লেখে দেয় এক কালিন। বুড়ির স্বামী এখানে আসার পাঁচ বছর আগে মারা যায়। সে বড় একা। তোর দাদাদের কাজ করতো সেখানে খাইতো তিন বেলা। আমি মনে যোগ দিয়ে শুনছি। বললাম দাদা তারপর ? দাদা বললো ওখানে বেশ পাঁচ বছর থাকলো বুড়ি। তোর দাদা যখন জমি জমা বেচা শুরু করলো।
তখন তো তাদেরই অভাব। বুড়িকে কাজে আর লাগতো না। বুড়ি গ্রামে গ্রামে ভিক্ষা করে বেড়াতো। সারাদিন ঘুরে এক কেজি হাফ কেজি চাল পেতো তা খেয়ে বুড়ি বাচতো। বুড়ি রাতে ভাত রান্না করতো সারাদিন খেতো। এই ভাবে চলে যায় এক মাসের মতো। তারপর বুড়ি আর চলতে পারে না। ভিক্ষা আর করতে পারে না বুড়ি। রান্না বান্না কষ্টে করে। তার পাশে দাড়ানোর মত কেউ ছিলো না। আমরা মাঝে মধ্যে যেতাম, তোর দাদা মাঝে মধ্যে বাজার করে দিতো। জমি বেচার টাকা দিয়ে। কিন্তুু তোর দাদা মারা যাওয়ার তিন মাস আগে অসুস্থ হয়ে পরে বুড়ি।
খরচ দিতে পারিনী তোর বাবারাও তেমন, খবরও নিতো খুব কম। দাদা একটু থেকে গেলেন। আমি বললাম দাদা তারপর কী হলো? দাদা বললো, তোর দাদা মারা যায়। বাবার মন্টা যেন খারাপ হয়ে গেলো আমারও। আমি বললাম দাদা বুড়িকে তখন কে রান্না করে দিতো? দাদা বললো এক মহিলা বুড়ির সাথে ভিক্ষা করতো। মহিলা টা একদিন ভিক্ষা করতে করতে আসে বুড়ির বাড়ী। মহিলাটা বুড়িকে খুব ভালোবাসতো তাই তাকে ফেলে যেতে পারিনী। সারা দিন ভিক্ষা করে যা চাল পেতো তা দুজনে ভাগ করে খেতো। সব চাইতে বড় কথা মহিলাটা বুড়িকে র্ধম মা বলে ডাকতো। মাস খানিক পর মহিলার ছেলেরা তাকে আর ভিক্ষা করতে দেয়না। সে ছেলেদের করা শাসনে বাড়ির বাহিরে বের হতে পারতো না। তখন বুড়ির আরো সমস্যা হয়ে যায়। বটগাছের সাথেই একটা ছিলো পশ্চিমে একটা পুকুর।
পুকুর টা ছিলো আমার দাদার আমলের। পুকুর টা ছিলো গভীর। এখন তো মাটি দিয়ে পুকুর টা ভরেই গেছে। আমি বললাম হ্যা দাদা এখন জোলা হয়ে আছে। আমি বললাম দাদা তারপর কী হলো? দাদা বললো বুড়িটা সেখানে গোছল করতো। ঐ পুকুরে আমরা গোছল তো দুরের কথা গরু বাছুর পযন্ত নিয়ে যাইনী গোছল করাতে। আমি অবাক হয়ে শুনচ্ছি। আকাশ টা পরিস্কার কোন মেঘ নেই। তারা গুলো মিটমিট করে আলো দিচ্ছে। জোসনা ভরা রাত, মশারীর চার দিক মিটমিট করে জ্বলচ্ছে জোনাকী পোকা। হঠাৎ মন্টা খারাপ হয়ে গেলো কারন আকাশে হঠাৎ করে মেঘ জমে যাওয়াতে। প্রচন্ড বাতাস বইছে। দাদা বললো আজ আর নয় আগামীকাল বলবো রাতে সব। দাদা গল্প ছাড়া থাকতেই পারে না, দাদার আপচস পুরোটা বলতে পারলো না। আমারও আপচস পুরোটা শুনতে পারলাম না। বাবা আমি মিলে বিছানাটা নিয়ে গেলাম ঘরে। আমি একা এক রুমে থাকি। শুয়ে পরলাম ঘুমানোর দোয়া বলে।
আমি সকালে ঘুম থেকে উঠলাম। ফজরে মা নামাজ পড়া শেষ হলে কুরআন পড়েন প্রতিদিন সকালে। হাত মুখ ধুয়ে মায়ের শাড়ীর আচল ধরে বসলাম। এক দেড় ঘন্টা মার মিষ্টি সুরে কুরআন পড়া শুনলাম প্রতিদিনের মতোই আজও। তারপর গোছল সেরে খাওয়া দাওয়া করে স্কুলে গেলাম। আমি স্কুলে গিয়ে দেখলাম কারও যেন মনেই নেই গতকালের কথা। ওরা সবাই হাসাহাসি করছে। আমাকে দেখে ওরা সবাই এলো আমি এদিক ওদিক তাকিয়ে দেখছি। হঠাৎ আসরাফ বললো আগামীকাল ফুটবল খেলা আছে পেছন পাড়ার সাথে। আমাকেও খেলতে হবে। আমি বললাম ঠিক আছে তবে কদ্দুছকে তো দেখছি না। আমি সবাইকে বললাম কদ্দুছ কোথাই? শহীদ বললো কদ্দুছ আজ আসবেনা। আমি বললাম কেন? আসরাফ বললো জানিসনা? আজ রাতে কদ্দুছের দাদা ঝড়ের পরে বাহিরে বেড় হয়েছে অমনী কে যেন তাকে ধাক্কা দিয়েছে। তিনি বলেন তাকে বড় বড় হাত পা আলা মানুষ ধাক্কা দিয়েছে। সবাই বলচ্ছে বুড়ির ঐ তিন মেয়ের কাজ এসব। আমি বললাম তাই নাকী তাহলে দেখে আসি চলো। ঘড়ির দিকে তাকালাম ক্লাস বসার আরো পোনে এক ঘন্টা সময় আছে। এর মধ্যে ঘুরে আসা যাবে।
আমরা সবাই চললাম কদ্দুছদের বাড়ী। আমি যাবার পথে বললাম সেই কথা গুলো। দাদা যা যা বলেছে। আমি লক্ষ করে দেখলাম প্রায় সবার গা শিংরে উঠেছে। আমি আর ভয় করিনা কয়জন বললো আমরা কিন্তু বাহিরে থাকবো ঘরে ঢুকবো না কদ্দুছের দাদার। আমি বললাম ঠিক আছে। আমি বুঝতে পারলাম ওরা ভয় পেয়েছে। আমি কদ্দুছের কাছে গেলাম ওর দাদাকেও দেখলাম কদ্দুছ কে নিয়ে এলাম স্কুলে। আসার পথে আমি মনে মনে ভাবছি আমাকেও যদি ধাক্কা দেয়। আবার ভাবী মানুষ তো বলে গায়েবীর কোন ক্ষতি না করলে কোন কিছু করে না।
আমি তো কোন ক্ষতি করিনী ওদের। ভালোভাবে আমি আমরা ক্লাস করলাম সবাই। বিকাল চারটায় স্কুল ছুটি হলো, বাড়িতে আসার পথে আসরাফ বললো শোনো সবাই, আজ আমাদের এমনীতেই খেলতে হবে। তা না হলে কাল সমস্যা হতে পারে। সবাই বললাম তা ঠিক তবে কখন আসবো। আসরাফ বললো পাঁচটার দিকে সবাই বটগাছের ওখানে অথাৎ বটতলী আসবে। সবাই মাথা নাড়িয়ে বললো ঠিক আছে তাই হবে। বাড়ী গিয়ে খাওয়া দাওয়া করে এলাম বটতলী। সবাই আমার জন্যই অপেক্ষা করছে। আমরা রওনা হলাম মাঠে যাওয়ার জন্য। হঠাৎ কদ্দুছ বললো বুড়ির কথা গুলো বলতো। ওদের বলেছিস। যাওয়ার পথে বললাম কদ্দুছকে সব দাদার কাছে যে টুকু শুনেছি।
কদ্দুছ বললো বাকি টুকু আজ জেনে নিস কিন্তু। আমি বললাম ঠিক আছে। সন্ধ্যার একটু আগেই এলাম। কারন কাল খেলা আছে, আবার স্কুল তাছাড়া দাদার কাছ থেকে জানতে হবে বাকি টুকু। এতো দিন মা বিছানা পেরে দিতো আজ আমি বিছানা পারছি। হঠাৎ মা বললো কীরে বাবা সূর্য আজ কোন দিকে উঠেছে। পড়তেও বসেছিস। এতো দিন মা পড়ার কথা না বলা পযন্ত তো পড়তেই বসতাম না। আমি মাকে বললাম, মা আমি স্কুলের পড়া শেষ দিয়ে দাদার কাছ থেকে গল্প শুনবো। মা বললো তাই বল। (মা আসলেই সত্যি ভালো, মাকে আমি খুব খুব ভালো বাসি। আমি মার জন্য দোয়া করি মা হাজার বছর বেচে থাক। এমন মায়ের গর্ভে জন্ম নিয়ে নিজেকে ধন্য মনে করি। মা তোমাকে হাজারও সালাম)।
মা আমাকে আর কিছু বললো না। আধার রাত শুরু আজ থেকেই, আকাশ টা মেঘলা হয়ে আছে। মা খাওয়ার জন্য ডাকচ্ছে খাওয়ার জন্য। খেয়ে এলাম বাহিরে এসে দেখলাম চার দিক কেমন যেন অন্ধকার হয়ে গেছে। মা বললো বাবা বিছানা নিয়ে আয় বৃষ্টি আসবে হয়তো। আমি মাকে বললাম ঠিক আছে কিছুখন দেখি কী হয়।আল্লাহ্ তালার রহমতে আকাশটা পরিস্কার হয়ে গেলো। ভাবছি ভালোই হলো কেন না কাল যে ফুটবল খেলা আছে তার অধিনায়ক আমি। জিতেই হবে নইলে স্কুলের খেলায় আমরা খেলতে পারবো না।
গরম শুরু হয়ে গেলো আমি খুশিই হলাম কেন না গরম না পড়লে আমাদের আঙ্গিনায় যে কেউ আসেনা। এক এক করে লোকজন আসচ্ছে আমাদের আঙ্গিনায়। কেউ পিড়ায় কেউ স্নেন্ডেলের উপড় বসে পরলো। বাবাও বাড়ীতে নেই বাজারে গেছে। আসতে দেরি করছে। প্রায় প্রতিদিন দেরি করে আসে বাবা বাজার থেকে। কিছুক্ষন আমি অন্য অন্য লোকজনের সাথে গল্প করলাম। আমার আর দেরি সহ্য হচ্ছে না। তাই দাদার ঘরে গেলাম তারপর দাদাকে বললাম তুমি এতো গরমের মধ্য ঘরে বসে আছো। দাদা বললো আসলে তোর দাদী খাবার দিতে দেরী করছে। আমি দাদীর কাছে গেলাম এবং তার কাজে সাহায্য করলাম। আর বললাম দাদা বুড়ো মানুষ তাকে একটু আগেই খেতে দিবে। দাদী ছিলো মজার, দাদী তখন বললো তোর দাদাকে আরেকটা বিয়ে করা। আমি বললাম দরকার পড়লে তাই করবো। এখন দাদাকে খেতে দাও। দাদা বললো খোকা তোর দাদীর সাথে পারবিনা আয়। দাদী দাদাকে খেতে দিলো। আমাকেও অনেক জিৎ করলো আমি খেলাম না।
দাদা আমাকে বললো যা আমি আসছি। আমি এলাম বিছানায় অল্প কিছুক্ষনের মধ্যে দাদা এলো। আমাদের আঙ্গিনায় মিটিং বসলে দাদাই যেন হয় তার সভাপতি। কারন দাদার বয়সের আর কেউ নেই। আমি দাদাকে বললাম দাদা সেদিন বুড়ির গল্প যে বলেছিলে তা এখন বলো বাকি টুকু। দাদা বললো কোথায় ছেড়ে ছিলাম বলতো। আমি বললাম পরীরা রাতে পুকুর টা খুড়েছিলো সেখান থেকে বাকি রেখেছিলে। দাদা তোমরা নাকী সেখানে ভয়ে গরু বাছুর পযন্ত নিয়ে যাওনী। দাদা বলো সত্যি তোর মেধা শক্তি ভালো। শোন সবাই শোনো বুড়ি সুস্থ থাকা কালে এই সব কথা আমাদের বলেছিলো। পাশের বাড়ীর এক ভাই বললো কী বলেছে? তারা অবশ্য বুঝে নিয়েছে দাদা কার কথা বলছে। সেই বুড়ির কথা যে বুড়ির তিনটি মেয়ে ছিলো আমাদের মতো মানুষ না পরী। আমি দাদাকে রাগ করেই বললাম দাদা তুমি অন্য দিকে কান দিওনা বলো তারপর কী হলো। সাড়ে নয়টা বাজে ঘুমাতে হবে। দাদা বললো, বুড়ি নাকী প্রায় স্বপ্নে দেখতো এই পুকুরে তিনটি পরী আছে।
লাল পরী, নীল পরী, আর হলুদ পরী। তারা বুড়িকে বলেছিলো এই গ্রাম থেকে একটা ছেলে নিয়ে যাবে, তানা হলে যাবেনা তারা। বুড়ি বাড়ি বাড়ি এই কথা বলে বেড়াতো। নিষেদ করতো সন্ধ্যার পর যেন কেউ বাহিরে না যায়। বিশ পচিশ বছর আগের কথা। তোর বাবারা তো তখন ছোট বিকাল পাঁচটার দিকে ঘুমে পড়তো। পিসাপ করতেও এক সাথে তিন চার জন বেড় হতো। আমি বললাম দাদা তার পর। দাদা বললো বুড়ি নামাজ পড়তো আল্লাহ্ ভক্ত ছিলো। বুড়ি যখন পুরোপুরি অসু¯থ তখন তার সেবাই কেউ আসেনী। বুড়ি অসুস্থ অবস্থায় আল্লাহ্ তালার কাছে মুনাজাতে বলে আল্লাহ্ সব কিছু কেরে নিয়েছ তুমি আমার সব। তুমি ছাড়া আমার আপন বলতে কেউ নাই। আমি মৃত্যুর পথও যাএী জানি আমি আর বাচবো না। তাই এক গ্লাস পানির অভাবে মারা যাবো। ঐ পথ দিয়ে তখন যাচ্ছিলো সেই তিন পরী।
লাল,নীল,ও হলুদ পরী। তারা বুড়ির কান্না শুনে থেমে যায়। তারপর মানুষের রুপ ধরে বুড়ির ঘরে আসে। বুড়িকে পানি খাওয়ায়, এমন কী গাঁ, মুছে দেয়। সারা রাত তারা সেবা করে বুড়ির। ফজরে চলে যায় তারা। হলুদ পরী, লাল পরীকে বলেছিলো বুবু আমরা যে বুড়ির সেবা করছি ও তো মানুষ। লাল পরী বললো আমরা যে পুকুর টা খুরে ছিলাম, কার জন্য এই গ্রামের মানুষদের জন্য। কিন্তু তারা তো পুকুরটা ব্যবহার করলো না। এই বুড়ি শুধু গোছল করেছে পুকুরটাতে, তা ছাড়া বুড়ির তো কেউ নেই। বুড়ি আজ থেকে আমাদের মা। বুড়িকে মা বানায় পরী তিনটি, সেই থেকে বুড়ির মেয়ে হয় পরী তিনটি। আমি বললাম দাদা তুমি এই কথা গুলে কী ভাবে জানলে। দাদা বললো বুড়িকে তারা দামি দামি ফল মূল খাওয়াতো। (বর্তমানের ফল তো বিভিন্ন ধরনের ঔষধ মিশানো। এই গুলো খেলে তো মানুষ অসুস্থ আরো বেশি হয়।
আমি সেই লোকদের উদ্দেশ্যে বলি আপনী যে খাদ্যে ঔষধ মিশান আপনার সন্তানও তো সেই ফল মূল খেতে পারে। আপনার সন্তানের কথা ভেবে আমাদের ঔষধ মিশানো ফল মূল খাওয়া থেকে মুক্তি দেন। আমি সবার হয়ে অনুরোধ করি।) সেই ফল খেয়ে বুড়ি সুস্থ হয়। এবং আগের মতো ভালো হয়ে যায়। এই কথা গুলো আমি নিজে শুনেছি বুড়ির মুখ থেকে। আমার পাশে বসা এক চাচী বললো বাবা কতদিন ছিলো পরী তিনটি কত দিন ছিলো বুড়ির কাছে। বা বুড়ির কে তারা কতদিনই বা খাওয়াতো এ ভাবে? আমি বললাম বুড়ি মারা গেছে না আজও বেচে আছে? দাদা বললো আমরাও জানিনা বুড়ি আজও বেছে আছে কী না। বুড়ির কাছে পরীরা প্রায় তিন বছরের মতো ছিলো। বুড়ি পরীদের বলেছিলো এই গ্রাম থেকে যে একটা ছেলে নিয়ে যাওয়ার কথা। তখন নীল পরী বলেছিলো না আমরা আর ছেলে চাই না।
আমরা মাকে হাড়িয়ে বুঝচ্ছি মা হারানোর কত বেদনা। আমরা আর কোন মায়ের বুক খালি করতে চাইনা। মিটিং এর সবাই মনোযোগ দিয়ে শুনচ্ছে। আমি তো গল্পের মধ্যে ডুবে গেছি। বললাম দাদা তারপর, দাদা বললো গ্রামের সবাই জেনে যায় বুড়ির ঘরে রাতে পরী আসে। তা দেখার জন্য গ্রামের দুষ্টু ছেলে গুলে বুড়িকে জ্বালাই তো। তখন পরীরা কম আসতো। আমি বললাম দাদা তুমি যাওনী পরীকে দেখতে। দাদা বললো গিয়েছিলাম তবে কোন দিন দেখতে পাইনী পরীদের কে। পরী দেখার খুব ইচ্ছা আমার। আমি বললাম আমারও দাদা। দাদা তারপর কী হলো। বুড়িই পরীদের বলেছিলো বুড়ি আর থাকবে না এই গ্রামে। তাদের সাথে অন্য কোথাও যাবে। সেই দিনটা ছিলো সোমবার। সকালে এসে বুড়ি সবার কাছে মাফ চায়। অনেক কাদে বুড়ি। সবাই কষ্টই পেলো কিন্তু আবার আনন্দে মেতে উঠলো কারন আজ সবাই পরীকে দেখবে। আমিও ছিলাম তাদের মধ্যে। সবার মুখে মুখে উঠে যায় আজ বুড়ি অছিলায় পরী দেখবো।
আমি বললাম তারপর দাদা, দাদা বললো আমরা বুড়ির বাড়ীর আশে পাশে অপেক্ষা করছি পরীকে দেখার জন্য। কিন্তু অনেক-ক্ষন পর দেখলাম বুড়ি একটা পাখির ডানার উপর বসে আছে। এবং উড়ে যাচ্ছে বুড়ি হাতের ইশারাই বলচ্ছে বিদায়। আমরা পরীর মুখ দেখতে পারিনী পরী দেখতে কেমন। আমি বললাম দাদা তারপর, দাদা বললো আমরা বাড়ী চলে আসি। পরেরদিন সকালে হৈ পরে যায় গ্রামে বুড়ির দরজায় একটা তালা লাগানো। পৃথিবীর কোন মানুষের বানানো না। আমরা সবাই যাই তালাটা দেখতে। এখনো আছে তবে আগে আরো চিকচিক করতো তালাটা। গ্রামের মড়লেরা ঠিক করে বুড়ির ঘর এখানেই থাকবে। তালাটাও থাকবে। আমাকে মা বার বার ডাকছে ঘুমাতে। আমি মাকে বললাম মা তুমি ঘুমাও আমি যাচ্ছি। দাদাকে বললাম তারপর কী হলো? দাদা বললো, সেই থেকে এমন অবস্থায় আছে। কেউ ভয়ে সেখানে যেতেই চায় না। বুড়ির খোজ সেই থেকে আর আমরা পাইনী। তারপর মাঝে মাঝে দেখা যায়, বুড়ির ঘর থেকে একেক রকম বিড়াল বেড় হয়। তবে বিড়াল তিনটা দেখতে শিয়াল এর মত। আমি বললাম দাদা সেদিন আমিও দেখেছি বিড়াল তিনটি। গল্প করতেই বেজে যায় রাত বারটা।
বুড়ির গল্প শেষ এখানেই দাদা বললো। এবং চলেও গেলো ঘরে। আমি বিছানা তুলছি। সবাই চলে যাচ্ছে। আমিও ঘরে এলাম ঘুমাতে। খুব গরম পরেছে। আমি এক ঘরে একাই থাকি। বাবা এলো বাজার থেকে। আমি দক্ষিনের জালানাটা খুলেদিলাম। আকাশ হঠাৎ মেঘ দিয়ে ভরে গেলো। বাতাস বইছে মাঝে মাঝে আবার আকাশে বিদ্যুৎ চমকাচ্ছে। আমার ঘুম ঘুম ভাব। এবং ভাবছি কালকের খেলায় জিৎতেই হবে আমাদের। ভাবতেই মনে পরে গেলো বুড়ির কথা। তার মেয়ে পরী তিনটি যদি আমাকেও নিয়ে যায়। তাহলে আমি কী করবো? আমাকে যদি তারা মেরে ফেলায়। আমি চমকে উঠলাম কিন্তু ভাবলাম না না আমাকে তারা নিয়ে যাবে কেন। হঠাৎ চোখ পড়লো জালানার দিকে। আমি দেখতে পেলাম সাদা কী যেন উড়চ্ছে। অন্ধকারের মধ্যে দেখা যাচ্ছে। মনে হয় আমার দিকে আসচ্ছে।
আমি ভয়ে কাপছি। মনে মনে বলছি আমাকেও বুঝি পরী গুলো নিতে এসেছে। আমি খাটে শুয়া থেকে উঠে বসলাম তবে মনে সাহস নেই। তবু চেষ্টা করছি জালানাটা লাগাবো কিন্তু হঠাৎ আমার পেছনে হেসে উঠে হ্যা,হ্যা,হা,হা,বার বার হাসছে। আমি দোয়া বলচ্ছি কোন কাজ হচ্ছেনা। বাতাস বইছে জোরে। হাসি যেন বন্ধ হয় না কমেও না। আমি আর যেন সহ্য করতে পারলাম না। একটা জোরে চিৎকার দিলাম মা ছুটে এলো বাতি নিয়ে। আমি কাপছি মা বলছে বাবা কী হয়েছে তোমার আমি যেন কিছু বলতে পারছিনা। মা জোরে বললো বাবা তোমার কী হয়েছে। বাবাও এলো বাবাও বলছে বাবা তোমার কী হয়েছে। আমার মুখ থেকে হঠাৎ বেড় হলো পরী। মা বললো পরী মানে? আমি বললাম মা ঐ দেখ আসচ্ছে। সাদা কাপড় পরে। বাবা বাহিরে টস লাইট মেরে হেসে উঠলো আমি বাবার দিকে তাকিয়ে আছি। মা বললো হাসছো কেন? বাবা বললো আরে ঐটা চাচীর সাদা শাড়ীটা। মানে ওর দাদীর সাদা শাড়ী। মা দোয়া বলে তিন বাবার ফু দিলো আমার শরীরে।
আমি একটু সুস্থ হলাম হঠাৎ আবার সেই হাসি হ্যা,হ্যা,হা,হা,করে। আমি চমকে উঠলাম এবং মাকে জড়িয়ে ধরলাম বললাম মা পরী আসছে হাসতে হাসতে মাও যেন হাসছে বলছে আরে পাগল ও হাসি তো তুমি মোবাইলে সেভ করে রেখেছ। তোমার ছোট মামা সুমন চট্টগ্রাম থেকে কল দিচ্ছে। আমার সাথে কথা বলবে। মা কথা বললো আমাকে দিতে চাইলো আমি কথা বললাম না। মা আমাকে নোহা গরম করে তার পানি খাওয়ালো। আমি আর ঐ ঘরে থাকলাম না। মার বুকে মাথা রেখে সারা রাত থাকলাম। প্রায় রাত দুটার মতো বাজে ঘুমালাম। পরেরদিন সকালে আমি ঘুম থেকে উঠলাম। উঠে দেখলাম আমাদের আঙ্গিনায় বৃষ্টির পানি জমে গেছে। আমি মাকে বললাম মা আমাদের আঙ্গিনায় পানি এলো কোথা থেকে। মা বললো আসলে তোর কী হয়েছে বলতো।
আমি বললাম কই কিছু হইনী তো। মা বললো আজ রাতে তো জোরে ঝড় হয়ে গেলো কিছুই বলতে পারিসনা। আমি বললাম থাক অনেক ছয়েছে বুঝে গেছি। আমি হাত মুখ ধুয়ে পড়তে বসলাম। হঠাৎ আমাদের আঙ্গিনায় কে যেন বলচ্ছে বুড়ির ঘর ঝড়ে ভেঙ্গে গেছে। আমি থমকেই গেলাম। পড়ে ভাবলাম স্কুলে গিয়ে বন্ধুদের নিয়ে যাবো বুড়ির বাড়ী দেখতে। আমি খাওয়া দাওয়া করে স্কুলে গেলাম। সবার আগে আজ স্কুলে গেলাম। মাঠে এক হাটু পানি। কিছু খন পরে এলো আমার সব বন্ধুরা। আমি তাদের সেই কথা গুলো বললাম দাদা যা যা বলেছে। তারা সবাই হা হা করে হেসে উঠলো আমার গত কাল রাতে ঘটে যাওয়া ঘটনা গুলো শুনে। আমি একটু লজ্জাই পেলাম। আর বললাম আমাকে আর লজ্জা দেসনা তোরা। চলো বুড়ির বাড়িটা দেখে আসি। সবাই চললাম রাস্তায় একটা লোক বললো বুড়ির ঘরে যে তালা ছিলো তা নাই। গিলাম আমরা দেখি ঠিক তালা নেই বুড়ির ঘরে। সবাই বলছে বুড়ির সেই তিন পরী মেয়ে হয়তো তালা নিয়ে গেছে। আমরা কিছু ক্ষন দেরি করে এলাম আবার স্কুলে। আমাদের আর খেলা হলোনা।