তাসরিফ বেশ কিছু দিন আগে গুগলে সার্চ করেছিলো “Best quality Headphone”। কিন্তু ইদানিং সে লক্ষ করছে তার ফেসবুকে যে সকল এড আসে, তার বেশিরভাগ অংশ হেডফোন রিলেটেড। যদিও এখনো সে হেডফোন কেনেনি, কিন্তু ব্যাপারটা যে শুধু ফেসবুকে দেখা যাচ্ছে তা কিন্তু না।
বরাবরের মত ইন্সটাগ্রামে গেলেও তাকে যেসব এড দেখায় সব গুলো চটকদার সব হেডফোনের কালেকশন। এতে অবশ্য তাশরিফের বেশ কিছু উপকার হয়েছে। অনেক ব্র্যান্ড সম্পর্কে এবং তাদের অফার সম্পর্কে জানতে পেরেছে।
কিন্তু সে খানিকটা চিন্তিত। তার ধারণা, গুগলে সার্চ করার আগে তার টাইমলাইনে এই ধরনের এড আসতো না।
ঘটনা বিশ্লেষণ- তাসরিফের সাথে ঘটা ঘটনা আমাদের সকলের সাথেই কম বেশি হয়। একটু ভালো করে চোখ কান খোলা রাখলে টের পাবেন আপনিও।
এরকম হওয়ার পেছনের কারণ হচ্ছে – ডিজিটাল মার্কেটিং। চৌকশ ডিজিটাল মার্কেটার বার বার রিসার্চ করে তাসরিফ কে টার্গেট করেছে। তার ফলে তার টাইমলাইনে তারা এই ধরণের এড নিয়ে আসতে সফল হয়েছে। আজকের পোস্টে আমরা আলোচনা করবো ডিজিটাল মার্কেটিং নিয়ে। আজকের পোস্টে আমরা জানবো-
Table of Contents
ডিজিটাল মার্কেটিং কি?
ডিজিটাল মার্কেটিং হচ্ছে- ইন্টারনেট, মোবাইল ফোন, সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহার করে কনজিউমারের কাছে পন্যের জানান দেওয়ার একটি পন্থা। মার্কেটিং এর কাজ মূলত মানুষের নিকট পন্য সঠিক সময়ে পৌঁছে দেয়া বা জানান দেয়া। বর্তমানে মানুষ বেশিরভাগ সময় ব্যয় করে থাকে
অনলাইনে। করোনাকালীন সময়ে তার স্থায়ীত্ব বৃদ্ধি পেয়েছে কয়েক গুন। এই বিশাল পরিমানের অডিয়েন্সের সামনে আপনার পন্য সম্পর্কে তুলে ধরার সহজ এবং কার্যকরী পদ্ধতি হচ্ছে ডিজিটাল মার্কেটিং।
যদি আরও সহজে বলতে চাই, ডিজিটাল মার্কেটিং হচ্ছে প্রোডাক্ট মার্কেটিং এর একটি দিক যেটি ইলেক্ট্রনিক্স ডিভাইস, সোসাল মিডিয়া, ইন্টারনেট এর সাথে সম্পৃক্ত।
যদি আরও সহজে বলতে চাই, ডিজিটাল মার্কেটিং হচ্ছে প্রোডাক্ট মার্কেটিং এর একটি দিক যেটি ইলেক্ট্রনিক্স ডিভাইস, সোসাল মিডিয়া, ইন্টারনেট এর সাথে সম্পৃক্ত।
ডিজিটাল মার্কেটিং কেন করবেন?
যেকোন ব্যাবসাকে প্রচার এবং প্রসারের জন্য মার্কেটিং প্রয়োজন। দিন বদলেছে, মার্কেটিং এর ধরন বদলেছে। মার্কেটিং এখন ডিজিটালাইজ হয়েছে। প্রতিষ্ঠান কিংবা পন্য, যেটাই হোক মার্কেটিং ছাড়া গতি নেই।
ডিজিটাল মার্কেটিং অনেক বেশি স্পেসিফিক এবং যেসকল মানুষ শুধু ঐ নির্দিষ্ট প্রোডাক্ট চান তাদের কাছেই মার্কেটিং করা যায়। যা প্রচলিত মার্কেটে সম্ভব নয়।
প্রচলিত পদ্ধতিতে কোন প্রোডাক্টের মার্কেটিং করতে গেলে ব্যবহার করতে হয় প্রিন্ট এড, ফোন কমুউনিকেশন, ফিজিক্যাল মার্কেটিং। তাও খুব সহজে মানুষের নিকট রিচ করা যায় না যতটা যায় অনলাইনের মাধ্যম। প্রচলিত মার্কেটিং এর আরো বড় ধরনের সমস্যা হচ্ছে এটাতে প্রচুর পরিমানে টাকা ব্যয় হয়। এক্ষেত্রে ডিজিটাল মার্কেটিং যেন একটি ত্রাতা হয়ে আসলো। খুব সহজে যদি কেউ তার টার্গেটেড অডিয়েন্সের নিকট পৌছাতে চান, ডিজিটাল মার্কেটিং এর বিকল্প নেই তাহলে।
ডিজিটার মিডিয়া ব্যবহার করে অডিয়েন্সের ইন্টারেস্ট অনুযায়ী এড শো করানো যায়, যেটি ফিজিক্যাল মার্কেটিং এ করা অসম্ভবপর। আর যদিও করা যায় তাও অত্যাধিক ব্যয় বহুল।
ফিজিক্যাল মার্কেটিং করতে গেলে দেখা যায় একসাথে অনেক গুলো মানুষের সামনে কোন একটা এড শো করানো হচ্ছে বা প্রিন্টিং এড দিয়ে দেয়া হচ্ছে।
এক্ষেত্রে দেখা যায় যে, উপস্থিত সকলে কিন্তু এই প্রোডাক্টটি সম্পর্কে সমান আগ্রহ দেখায় না। যেটি আশাও করা যায় না। এক্ষেত্রে হয় কি, যাদের প্রোডাকটি সম্পর্কে কৌতুহল রয়েছে তারাই মুলত প্রোডাক্টিভ মার্কেটিং এর আওতায় পড়েন। বাদ বাকি যারা আছেন তাদের কাছ থেকে কোম্পানি আশা করার তেমন কিছু থাকে না। আগ্রহ প্রকাশ করেন না এমন লোকের সংখ্যা যত বেশি হবে তত বেশি মার্কেটিং ব্যার্থ হবে।
কিন্তু ডিজিটাল মার্কেটিং এ এটির কোন সুযোগ নেই।
যদি আপনি ভালো কোন এজেন্সির নিকট হতে মার্কেটিং করাতে পারেন তাহলে আপনার প্রায় প্রতিটি এড টার্গেটেড অডিয়েন্সের কাছে রিচ করবে। মানে এড গুলো স্পেসিফিক তাদের কাছে শো করবে যারা মুলত আগ্রহ দেখান উক্ত পন্যের সম্পর্কে। এটি হচ্ছে ডিজিটাল মার্কেটিং এর সবচেয়ে বড় প্লাস পয়েন্ট।
ডিজিটাল মার্কেটিং অনেক বেশি স্পেসিফিক এবং যেসকল মানুষ শুধু ঐ নির্দিষ্ট প্রোডাক্ট চান তাদের কাছেই মার্কেটিং করা যায়। যা প্রচলিত মার্কেটে সম্ভব নয়।
প্রচলিত পদ্ধতিতে কোন প্রোডাক্টের মার্কেটিং করতে গেলে ব্যবহার করতে হয় প্রিন্ট এড, ফোন কমুউনিকেশন, ফিজিক্যাল মার্কেটিং। তাও খুব সহজে মানুষের নিকট রিচ করা যায় না যতটা যায় অনলাইনের মাধ্যম। প্রচলিত মার্কেটিং এর আরো বড় ধরনের সমস্যা হচ্ছে এটাতে প্রচুর পরিমানে টাকা ব্যয় হয়। এক্ষেত্রে ডিজিটাল মার্কেটিং যেন একটি ত্রাতা হয়ে আসলো। খুব সহজে যদি কেউ তার টার্গেটেড অডিয়েন্সের নিকট পৌছাতে চান, ডিজিটাল মার্কেটিং এর বিকল্প নেই তাহলে।
ডিজিটার মিডিয়া ব্যবহার করে অডিয়েন্সের ইন্টারেস্ট অনুযায়ী এড শো করানো যায়, যেটি ফিজিক্যাল মার্কেটিং এ করা অসম্ভবপর। আর যদিও করা যায় তাও অত্যাধিক ব্যয় বহুল।
ফিজিক্যাল মার্কেটিং করতে গেলে দেখা যায় একসাথে অনেক গুলো মানুষের সামনে কোন একটা এড শো করানো হচ্ছে বা প্রিন্টিং এড দিয়ে দেয়া হচ্ছে।
কিন্তু ডিজিটাল মার্কেটিং এ এটির কোন সুযোগ নেই।
ডিজিটাল মার্কেটিং এর ধরণ-
ডিজিটাল মার্কেটিং কে ২ ভাগে ভাগ করা যায়। অনলাইন মার্কেটিং এবং অফলাইন মার্কেটিং।
অনলাইন মার্কেটিং
সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন
সার্চ ইঞ্জিন মার্কেটিং
কন্টেন্ট মার্কেটিং
সোস্যাল মিডিয়া মার্কেটিং
পে-পার-ক্লিক এডভার্টাইজিং
এফিলিয়েট মার্কেটিং
ই-মেইল মার্কেটিং
অফলাইন মার্কেটিং
Enhanced অফলাইন মার্কেটিং (LED Tv add)
রেডিও মার্কেটিং
টেলিভিশন মার্কেটিং
ফোন মার্কেটিং
সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন
বর্তমানে সবচেয়ে বেশি ট্রাফিক জেনারেট করতে পারে সার্চ ইঞ্জিন। এবং সবচেয়ে জনপ্রিয় মার্কেটিং স্ট্রাটেজি হচ্ছে সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন। এক কথায় যদি এসইও সম্পর্কে বলি তাহলে কথা টা এমন দাঁড়ায় যে – ওয়েবসাইটকে এমন ভাবে সাজানো, যার মাধ্যমে সার্চ ইঞ্জিন গুলো জানতে পারে আপনার কন্টেন্টে কি রয়েছে এবং যারা সার্চ করছেন তাদের কি-ওয়ার্ড এর সাথে ম্যাচ করে সাইট কে অপটিমাইজ করাই হচ্ছে সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন।
সার্চ ইঞ্জিন মার্কেটিং
সার্চ ইঞ্জিন মার্কেটিং কে সংক্ষেপে বলা হয় সার্চ মার্কেটিং। সার্চ মার্কেটিং হচ্ছে এমন একটি প্রসেসের নাম যার মাধ্যমে ট্র্যাফিক গেইন করা যায় পেইড এবং আন-পেইড উভয় মাধ্যমে। অর্থাৎ গুগলে যখন সার্চ করি তখন দুই ধরনের রেজাল্ট আসে। যেগুলো পেইড সেগুলো ছোট্ট করে (ad) লেখাটা লেখা থাকে। আর যেগুলো আনপেইড সেটি এসইও এর আওতায় পড়ে।
কন্টেন্ট মার্কেটিং
কন্টেন্ট মার্কেটিং বলতে অনেকেই মনে করে থাকেন ব্লগ পোস্টকে, তবে ব্যাপারটি পুরোপুরি এমন নয়। গল্প বলার মাধ্যমে অনেকে অনেক ধরনের প্রোডাক্টের কথা আমাদের সামনে তুলে আনেন। স্টোরিটেলিং এর মাধ্যমে প্রচার করাটাই মূলত কন্টেন্ট মার্কেটিং। এসব নিয়ে আমাদের বিস্তারিত আলোচনা হবে আগামী পোস্ট গুলোতে। তবে এর আগে আরেকটু মস্তিষ্কের খোরাক দিয়ে যাই, সেটা হচ্ছে কন্টেন্ট মার্কেটিং প্রথম শুরু হয়েছে ১৮৮৫ সালে (The Furrow) নামের একটি ম্যাগাজিন এর মধ্য দিয়ে।
সোস্যাল মিডিয়া মার্কেটিং
ডিজিটাল মার্কেটিং এর সবচেয়ে জনপ্রিয় দিক হচ্ছে সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং। কারণ বর্তমান সময়ে মানুষ সবচেয়ে বেশি সময় ব্যয় করেন সোস্যাল মিডিয়াতে। সেলারদের জন্য সবচেয়ে উপযুক্ত স্থান হচ্ছে সোস্যাল মিডিয়া, ফেসবুক, টুইটার, ইনস্টাগ্রাম ইত্যাদি। খুব কম খরচে টার্গেটেড অডিয়েন্সের কাছে পৌছানোর সবচেয়ে সহজ মাধ্যম হচ্ছে সোস্যাল মিডিয়া মার্কেটিং।
পে-পার ক্লিক এডভার্টাইজিং
মার্কেটিং এর ক্ষেত্রে একটি নির্ভরযোগ্য ক্ষেত্র হচ্ছে পে-পার-ক্লিক এডভার্টাইজিং। বিশেষ করে যারা ওয়েবসাইটে ট্রাফিক জেনারেট করতে মার্কেটিং করেন তাদের জন্য সবচেয়ে উপযুক্ত একটি পদ্ধতি। এই পদ্ধতিতে প্রতি ক্লিক অনুযায়ী আপনাকে টাকা গুনতে হবে এড এর জন্য। এছাড়া এফিলিয়েট মার্কেটিং যারা করেন তারা এই পদ্ধতি ব্যবহার করে ভালো সুবিধা করতে পারবেন। তবে এটি একটি ব্যয় বহুল প্রক্রিয়া।
অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং
অন্যকে রেফার করার মাধ্যমে যে মার্কেটিং পদ্ধতি গড়ে উঠেছে সেটিই অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং । এখানে যারা এফিলিয়েট মার্কেটিং করে থাকেন তাদের নিজেদের কোন প্রোডাক্ট থাকে না। ব্যাকলিংক এর মাধ্যমে ট্রাফিক জেনারেট করে দেয়ার এই মার্কেটিং স্ট্র্যাটেজিটির ইভল্ভ হয়েছে। এফিলিয়েট মার্কেটিং ডিজিটাল মার্কেটিং এর মধ্যে সবচেয়ে আলোচিত এবং কার্যকরী মাধ্যম গুলোর একটি।
Enhanced অফলাইন মার্কেটিং
সহজে বলি যদি- রাস্তার পাশে বিলবোর্ডে এনিমেটেড যে এড গুলো রান করে সেগুলোই মূলত Enhanced অফলাইন মার্কেটিং। সবচেয়ে ব্যয় বহুর একটি মার্কেটিং স্ট্র্যাটেজির মধ্যে একটি। ট্রাফিক জ্যাম সমৃদ্ধ স্থানে যদি এই টাইপের এড বসানো যায়, বিশাল পরিমান একটা অডিয়েন্সের কাছে রিচ করতে পারে খুব সহজে। বিশেষ করে ইলেকট্রনিক পন্য সেলাররা এটি ব্যাবহার করে থাকেন।
টেলিভিশন মার্কেটিং
টার্গেটেড অডিয়েন্স রিচের ব্যাপারে টেলিভিশন মার্কেটিং অনেক পিছিয়ে ডিজিটাল মার্কেটিং এর অন্যান্য দিক এর তুলনায়। এটা অস্বীকার করার জো নেই। কারন টেলিভিশনে যে এড শো করানো হয় তা আসলে সবাইকে উদ্দেশ্য করে দেয়া হয়। কিন্তু ডিজিটাল মার্কেটিং এর অন্যন্য সেক্টর গুলোতে মানুষের ইন্টারেস্ট এবং সার্ফিং এর ধরণ অনুযায়ী এড শো করা হয়। সে ক্ষেত্রে টিভি মার্কেটিং এ কিছুটা ভাটা নিশ্চই পড়েছে। কিন্তু তার পরেও মার্কেটিং এর হিউজ একটা শেয়ার ধরে ফেলেছে তারা।
Leave a Reply